শিশুর জন্য আতঙ্ক এ্যাজমা
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ। এই শিশু যখন কোন রোগ ব্যাধির শিকার হয় তখন সেটা একই সাথে পরিবার এবং জাতিকে ধাক্কা দেয়। শিশুদের একটি ভয়ংকর রোগের নাম এ্যাজমা। কোন শিশু হয়ত খেলার সময় খেলতে খেলতে এ্যাজমায় আক্রান্ত হয়। আবার কোন শিশুর ক্ষেত্রে গভীর রাতে এ্যাজমা তার কালো থাবা বসিয়ে দেয়। মা বাবার জন্য শিশুদের সবসময় নজরবন্দি রাখা অনেক কঠিন বিষয়। কিন্তু এ্যাজমা আক্রান্ত শিশুটির দিকে নজর না রেখে উপায় কী? আর যদি মা বাবা অনেক আগে থেকেই সচেতন থাকেন তবে শিশুটি হয়ত একসময় এই কঠিন রোগ থেকে মুক্তি পায়। আসুন জেনে নিই শিশুর এ্যাজমায় পরিবারের করণীয় কিছু বিষয়-
এ্যাজমা এর দিনলিপি তৈরিঃ
একটা শিশুর চিকিৎসা ঠিকভাবে হওয়ার জন্য মা বাবার উচিত শিশুর এ্যাজমা বিষয়ক উন্নতি অবনতি লিপিবদ্ধ করা। ডাক্তার অবশ্যই জানতে চাইবে যে তার চিকিৎসা পদ্ধতি কাজ করছে কি না। তাই আপনার শিশুর রোগের দৈনন্দিন সব খুঁটিনাটি লিখে রাখার জন্য আজই এ্যাজমা ডায়েরি তৈরি করুন। আপনার শিশুর কখন এ্যাজমা এ্যাটাক হয়েছে, কোন কোন দিনে হয়েছে এবং লক্ষণগুলো কী কী ছিল সব বিস্তারিত লিখে রাখুন। অবশ্যই দিন তারিখ লিখতে ভুলবেন না। শিশু যদি নিয়মিত ঔষধ গ্রহণ করে তবে ঔষধের প্রতিক্রিয়া এবং ডোজের পরিমাণও লিখে ফেলুন। আর কোন পরিস্থিতিতে তার এ্যাজমা বেড়ে যায় সেটাও লিখতে হবে পরিপূর্ণভাবে।
পিক ফ্লো মিটার ব্যবহার করুনঃ
প্রতি মিনিটে ফুসফুসে কতটুকু বাতাস পরিবাহিত হয় এটা পরিমাপের জন্য পিক ফ্লো মিটার ব্যবহার করা হয়। এটা আপনাকে শিশুর ফুসফুসের অবস্থা জানতে সাহায্য করবে। আপনার ডাক্তার বা ডাক্তারের সহযোগীর কাছ থেকে পিক ফ্লো মিটার ব্যবহার পদ্ধতি জেনে নিন।
নিয়ত ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহনঃ
আপনার শিশুকে নিয়মিত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। এমনকী যখন সে ভালো বোধ করে তখনও। ডাক্তার আপনার শিশুর শ্বাস প্রশ্বাস পরীক্ষা করবেন। যদি শিশুটি ঔষধ গ্রহণ করে থাকে, ডাক্তার বোঝার চেষ্টা করবেন ঔষধ ঠিকমত কাজ করছে কী না। ডাক্তার এ্যাজমা ডায়েরি দেখে রোগী সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাবেন এবং
ঔষধ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি সম্পর্কে জানুনঃ
আপনি যদি শিশুর এ্যাজমার ঔষধ সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা পান তবে সহজেই শিশুর যত্ন নিতে পারবেন। ঔষধ বিষয়ে মা বাবাকে যে সব জিনিস মনে রাখতে হবে তা হল-
১। ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশনা মেনে চলুন।
২। সময়ের ঔষধ সময়ে প্রদান করুন।
৩। এ্যাজমার লক্ষণের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ঔষধ প্রদানের প্রয়োজন হতে পারে।
৪। শিশু যখন সুস্থ থাকে তখনও ঔষধ নিয়ে অবহেলা করবেন না।
৫। ঔষধের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ডাক্তারকে বিস্তারিত জানান।
এ্যাজমা বিষয়ে খুঁটিনাটি জানুনঃ
আপনিও আপনার শিশুর জন্য তৈরি করা মেডিকেল টিমের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তাই ডাক্তার বা তার স্টাফের কাছ থেকে এ্যাজমা বিষয়ে খুঁটিনাটি জেনে নিন। যে সব জিনিসের সংস্পর্শে শিশুর এ্যাজমা বেড়ে যায়, সেসব থেকে শিশুকে দূরে রাখুন। ঠিকভাবে ইনহেলার ব্যবহারের পদ্ধতি জেনে নিন। আপনার শিশুকে সাহস প্রদান করুন, কারণ অনেক সময় দুঃশ্চিন্তাও এ্যাজমা বাড়িয়ে দিতে পারে।
সুত্রঃ BMA
প্রতিক্ষণ/এডি/ইমতিয়াজ